অনেক শিশুরাই কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন রোগে ভোগে। এ নিয়ে অবিভাবকরা বেশ চিন্তায় থাকেন। সাধারণত শিশুরা মলত্যাগ করার সময় যদি অসুবিধা হয় অথবা বেশি সময় লাগে, তাহলেই বুঝবে সে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছে।

অনেক সময় অসুস্থতার কারণে কম খাওয়ার ও অপর্যাপ্ত পানি পান করায় কিছুদিনের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তবে এ অসুখটি আসলে বয়স্কদেরই বেশি হয়।

অনেক কারণে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। যেমন : খাদ্যাভ্যাসজনিত, গরুর দুধ খেলে, শারীরিক ত্রুটি বিশেষ করে অ্যানোরেকটাল স্টেনোসিস বা মলদ্বার জন্মগতভাবে বন্ধ থাকলে, স্নায়ুতন্ত্রের ত্রুটি, মানসিক প্রতিবন্ধী, স্নায়ুর সমস্যা বা সেরেব্রাল পলসি, জন্মগতভাবে পেটের সামনের মাংস না থাকলে, শরীরের শক্তি কমে যাওয়া বা হাইপোটনিয়া হলে, হাইপোথাইরয়েডিজম, বহুমূত্র রোগ , শরীরে ক্যালসিয়াম বেশি, রেনাল টিউবুলার অ্যাসিডোসিস হলে এ রোগ দেখা দেয়।

এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD

লক্ষণ

* খাওয়া-দাওয়ায় অনীহা, ক্ষুধামন্দা ভাব দেখা দেবে।

* পেটে ব্যথা মাঝে মধ্যে থাকবে, আবার নাও নাকতে পারে।

* বমি হতে পারে বা বমি ভাব থাকতে পারে।

* শরীরের ওজন কম বাড়বে।

* পরীক্ষা করলে দেখা যাবে পেটটা শক্ত ও ফুলে আছে। পেটের ওপর হাত দিলে মল শক্ত অনুভূত হবে। মলদ্বার আর্দ্র থাকবে এবং স্ফিংটার খোলা থাকবে।

চিকিৎসা

শিশুকে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে এবং আঁশযুক্ত খাবার দিতে হবে। শক্ত পায়খানা নরম করার জন্য প্রাথমিকভাবে বাসায় গ্লিসারিন সাপোজিটরি দেয়া যেতে পারে।

শিশুকে শান্তভাবে মলত্যাগ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

মলদ্বারে ফিসার থাকলে চিকিৎসা করাতে হবে। মানসিক কোনো সমস্যা থাকলে শিশু-মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

এসব চিকিৎসায় ব্যর্থ হলে ধরে নিতে হবে শিশুর হারসপ্রং রোগ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় মলদ্বার থেকে বায়োপসি করলে প্যারা সিম্পেথেটিক গ্যাংলিওনিক সেল নেই।

এ রোগ সাধারণত জন্মের প্রথম মাসে ৮০ শতাংশ এবং প্রথম বছরে ৯৫ শতাংশ ধরা পড়ে। এ রোগে পেট ফোলা, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবারে অনীহা, হলুদ বমি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।

এ রোগে এক্স-রে করলে পেটে গ্যাস ও মল দেখা যাবে। রেকটাল অ্যাম্পুলায় গ্যাস থাকা মানেই হারসপ্রং রোগ। অপারেশন করে এর চিকিৎসা করাতে হবে। তাই শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে অবহেলা করবেন না। জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।